সন্তান থাকতেও টানা তিনদিন অনাহারে কাতর বৃদ্ধ বাবা!
দৈনিক নেত্রকোনা
প্রকাশিত: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সন্তানরা থাকতেও না খেয়েই দিন কাটাচ্ছেন শতবর্ষী শালি নেওয়াজ। টানা তিন দিনের অনাহারে কাতর এই বৃদ্ধ। গত তিন দিন পেটে কোনো খাবার-পানি না পড়ায় প্রাণ যায় যায় অবস্থা তার।
জন্মদাতা বাবার এমন করুণ পরিস্থিতিতেও বিন্দুমাত্র মায়া কিংবা মানবিকতা জাগেনি সন্তানদের মনে। অমানবিকতার এমন খবর এক কান দু’কান করে শেষ পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের কানে পৌঁছায়।
সোমবার দুপুরে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন খাবার-দাবার নিয়ে শতবর্ষী শালি নেওয়াজের বাড়িতে যান। নিজের বাবার মতো অসহায় বৃদ্ধের মুখে খাবার তুলে দেন ইউএনও। খাবার খাওয়ানো শেষে শতবর্ষী বৃদ্ধকে বয়স্কভাতার কার্ড এবং তার সন্তানদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন ইউএনও। এ সময় আবেগে কেঁদে ফেলেন বৃদ্ধ শালি নেওয়াজ।
অসহায় এই বৃদ্ধ উপজেলার সাধুহাটি গ্রামের বাসিন্দা। শালি নেওয়াজের দুই ছেলে চার মেয়ে। সবাই কর্মজীবী এবং বিবাহিত। পুত্রবধূ এবং নাতি-নাতনি থাকলেও শালি নেওয়াজের খোঁজ নেয় না কেউ।
ইউএনও বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পাই তিন দিন ধরে শতবর্ষী বৃদ্ধ মানুষটিকে খাবার দিচ্ছেন না তার সন্তানরা। না খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। খবর পেয়ে কিছু খাবারের ব্যবস্থা করি অসহায় বৃদ্ধ বাবার জন্য। ওসব খাবার-দাবার নিয়ে তার বাড়ি আসি। খাবার খাওয়ানোর পর তিনি কিছুটা সুস্থ বোধ করছেন। তার জন্য কিছু শুকনা খাবারও দিয়েছি। এগুলো তিনি পরবর্তীতে খাবেন।
তিনি আরো বলেন, বৃদ্ধের সন্তান ও পুত্রবধূদের কাছে খাবার না দেয়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। পরে বৃদ্ধের বাবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন সন্তান ও পুত্রবধূরা। সেই সঙ্গে বৃদ্ধ বাবার নিয়মিত খাবার-দাবার চালিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। এর ব্যতিক্রম হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব বলে জানিয়ে দিয়েছি।
ইউএনও বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে বৃদ্ধ শালি নেওয়াজকে একটি বয়স্কভাতার কার্ড করে দেয়া হবে। মাঝে মধ্যে তার খোঁজ-খবর নেয়া হবে।